ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৩৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অন্য যেকোনো উৎসবের তুলনায় ঈদুল আজহায় দেশের অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়ে সবচেয়ে বেশি। এবারের কোরবানির ঈদেও গতবারের চেয়ে প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল। এছাড়া নির্বাচনী বছর হওয়ায় অর্থ ব্যয় বৃদ্ধির আশাটা আরো বেশি ছিল। কিন্তু গবাদিপশুসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বেচাকেনা প্রত্যাশার চেয়েও কম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বিপণিবিতানে পোশাকসহ নানা জিনিসের টুকটাক কেনাকাটা হলেও দেশে দফায় দফায় বন্যার কারণে ফসলহানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কেনাবেচায় মন্দাভাব গেছে। এ ছাড়া হাটে পশুর দাম আগের বছরের তুলনায় ছিল কম। পাশাপাশি চামড়ার দামেও ছিল চরম মন্দা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কোরবানির ঈদে জবাইকৃত পশুর মোট আর্থিক মূল্যের পরিসংখ্যান সরকারিভাবে কোনো তথ্য নেই। তবে গতবারের মতো দেশের প্রাকৃতিক অবস্থা স্থিতিশীল না থাকায় গত বছরের চেয়ে লেনদেনের পরিমাণ কম হয়েছে। এর কারণ হলো- এবার মানুষ স্বচ্ছল ছিল না। বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলহানির ফলে মানুষের হাতে অর্থ ছিল না। দেশের বাইরের বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল না। এছাড়া পশু কোরবানিও আশানুরূপ হয়নি। চামড়ার দর ছিল পানির দামে। সবমিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে এবার বাড়তি প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা যোগ হয়েছে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এবারের ঈদে ৫০ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।
এফবিসিসিআই এবং চামড়া শিল্পের সংগঠন- বিটিএ, বিএইচএসএমএ ও বিএফএলএলএফইএ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ অর্থনীতিতে অতিরিক্ত টাকার প্রবাহ বাড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে রয়েছে গবাদিপশু বিক্রি বাবদ ২১ হাজার কোটি টাকা, পশুর চামড়া বেচাকেনায় ২ হাজার কোটি টাকা এবং পরিবহন খাতে ৬০০ কোটি টাকা। এছাড়া অন্য খাতে এই ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত যোগ হয়। এ ছাড়া কোরবানি পশুর চামড়া নষ্ট ও পাচারসহ প্রতি পিস চামড়ার দাম গড়ে ১ হাজার টাকা ধরা হলে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় বাবদ লেনদেন হবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কোরবানির পশুর বেচাকেনা তুলনামূলক কম হয়েছে। দামও আগের বারের চেয়ে কমে হয়েছে। এর পাশাপাশি চামড়ার দামে গেছে চরম মন্দা। এছাড়া কোরবানি উপলক্ষে চামড়া কেনার জন্য ব্যাংকগুলো কমপক্ষে ৯০০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। সবমিলিয়ে এবারের ঈদে লেনদেন ৪০ হাজার কোটি টাকার ঘরেই ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর দেশে পশু কোরবানি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ। চলতি বছর দেশের বাজারে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু। এবার কী পরিমাণ পশু জবাই হয়েছে তার পরিসংখ্যান এখনো প্রস্তুত হয়নি। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার করণে কোরবানি কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অধিদপ্তরের মতে, চলতি বছর কোরবানিযোগ্য গরু-মহিষ ছিল ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার, ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭১ লাখ। গত বছরের চেয়ে এবার চাহিদা যদি ১০% বাড়ে, তাহলে এবার ১ কোটি ২০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে। সে হিসাবে এবার গড় ১টি গরুর মূল্য কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা মূল্য ধরলে কোরবানিতে গরুর বাণিজ্য হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এদিকে দেশে কোরবানি যোগ্য ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৭১ লাখ। বর্তমানে ছাগলের বাজারদর সর্বনিম্ন ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গড়ে প্রতিটি ছাগল ২০ হাজার টাকা ধরা হলে এ বাবদ প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হবে। এ হিসাবে কোরবানির পশু বেচাকেনা বাবদ লেনদেন হওয়ার কথা ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পশু কোরবানির কম হওয়ায় সেই পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, গত বছর ৪০ লাখ ৬১ হাজার গরু কোরবানি হয়েছিল। যার মূল্য ছিল ১৭ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। এবার প্রায় ৫০ লাখ গরু কোরবানি হওয়া প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে পশু কোরবানি কম হলেও গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড হয়েছে। আলোচ্য মাসে দেশে প্রায় ১৪২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির ঈদে সব সময় রেমিট্যান্স বাড়ে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ঈদের কারণে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড হয়েছে। শহর থেকে গ্রামমুখী হয়েছে টাকার প্রবাহ। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এ সময় পশুসহ অন্য সব খাতেই লেনদেন অনেক বাড়ে। এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যে যে স্থবিরতা ছিল, সেটা কেটে যায়।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ বলেন, আগে শুধু কোরবানি দেয়াটাই ছিল মুখ্য। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পর্যটন। যুক্ত হয়েছে ঈদ বোনাস। সব মিলিয়ে একটি ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে অর্থনীতিতে। তিনি বলেন, ফ্রিজ, টিভি প্রভৃতি পণ্যের বিক্রি বাড়ছে। নতুন নোটের সার্কুলেশন বাড়ছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতেও আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগছে। ফলে ঈদের অর্থনীনিতিটা বড় হচ্ছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হেলাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের হিসাবে ছোট-বড় মিলে গড়ে একটি দোকানে লেনদেন ছিল প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এবার সেটি নেমে এসেছে অর্ধেকের কম। অর্থাৎ প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম লেনদেন হয়েছে। এর কারণ হলো- এবার মানুষ স্বচ্ছল ছিল না। বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলহানির ফলে মানুষের হাতে অর্থ ছিল না। দেশের বাইরের বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল না। এছাড়া পশু কোরবানিও আশানুরূপ হয়নি। গত বছর যা হয়েছিল এবার তার চেয়ে কম কোরবানি হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঈদে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য

আপডেট টাইম : ০১:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অন্য যেকোনো উৎসবের তুলনায় ঈদুল আজহায় দেশের অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়ে সবচেয়ে বেশি। এবারের কোরবানির ঈদেও গতবারের চেয়ে প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল। এছাড়া নির্বাচনী বছর হওয়ায় অর্থ ব্যয় বৃদ্ধির আশাটা আরো বেশি ছিল। কিন্তু গবাদিপশুসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বেচাকেনা প্রত্যাশার চেয়েও কম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বিপণিবিতানে পোশাকসহ নানা জিনিসের টুকটাক কেনাকাটা হলেও দেশে দফায় দফায় বন্যার কারণে ফসলহানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে কেনাবেচায় মন্দাভাব গেছে। এ ছাড়া হাটে পশুর দাম আগের বছরের তুলনায় ছিল কম। পাশাপাশি চামড়ার দামেও ছিল চরম মন্দা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কোরবানির ঈদে জবাইকৃত পশুর মোট আর্থিক মূল্যের পরিসংখ্যান সরকারিভাবে কোনো তথ্য নেই। তবে গতবারের মতো দেশের প্রাকৃতিক অবস্থা স্থিতিশীল না থাকায় গত বছরের চেয়ে লেনদেনের পরিমাণ কম হয়েছে। এর কারণ হলো- এবার মানুষ স্বচ্ছল ছিল না। বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলহানির ফলে মানুষের হাতে অর্থ ছিল না। দেশের বাইরের বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল না। এছাড়া পশু কোরবানিও আশানুরূপ হয়নি। চামড়ার দর ছিল পানির দামে। সবমিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে এবার বাড়তি প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা যোগ হয়েছে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এবারের ঈদে ৫০ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।
এফবিসিসিআই এবং চামড়া শিল্পের সংগঠন- বিটিএ, বিএইচএসএমএ ও বিএফএলএলএফইএ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ অর্থনীতিতে অতিরিক্ত টাকার প্রবাহ বাড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে রয়েছে গবাদিপশু বিক্রি বাবদ ২১ হাজার কোটি টাকা, পশুর চামড়া বেচাকেনায় ২ হাজার কোটি টাকা এবং পরিবহন খাতে ৬০০ কোটি টাকা। এছাড়া অন্য খাতে এই ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত যোগ হয়। এ ছাড়া কোরবানি পশুর চামড়া নষ্ট ও পাচারসহ প্রতি পিস চামড়ার দাম গড়ে ১ হাজার টাকা ধরা হলে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় বাবদ লেনদেন হবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কোরবানির পশুর বেচাকেনা তুলনামূলক কম হয়েছে। দামও আগের বারের চেয়ে কমে হয়েছে। এর পাশাপাশি চামড়ার দামে গেছে চরম মন্দা। এছাড়া কোরবানি উপলক্ষে চামড়া কেনার জন্য ব্যাংকগুলো কমপক্ষে ৯০০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। সবমিলিয়ে এবারের ঈদে লেনদেন ৪০ হাজার কোটি টাকার ঘরেই ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর দেশে পশু কোরবানি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ। চলতি বছর দেশের বাজারে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু। এবার কী পরিমাণ পশু জবাই হয়েছে তার পরিসংখ্যান এখনো প্রস্তুত হয়নি। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার করণে কোরবানি কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অধিদপ্তরের মতে, চলতি বছর কোরবানিযোগ্য গরু-মহিষ ছিল ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার, ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭১ লাখ। গত বছরের চেয়ে এবার চাহিদা যদি ১০% বাড়ে, তাহলে এবার ১ কোটি ২০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে। সে হিসাবে এবার গড় ১টি গরুর মূল্য কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা মূল্য ধরলে কোরবানিতে গরুর বাণিজ্য হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এদিকে দেশে কোরবানি যোগ্য ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৭১ লাখ। বর্তমানে ছাগলের বাজারদর সর্বনিম্ন ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গড়ে প্রতিটি ছাগল ২০ হাজার টাকা ধরা হলে এ বাবদ প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হবে। এ হিসাবে কোরবানির পশু বেচাকেনা বাবদ লেনদেন হওয়ার কথা ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পশু কোরবানির কম হওয়ায় সেই পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, গত বছর ৪০ লাখ ৬১ হাজার গরু কোরবানি হয়েছিল। যার মূল্য ছিল ১৭ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। এবার প্রায় ৫০ লাখ গরু কোরবানি হওয়া প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে পশু কোরবানি কম হলেও গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড হয়েছে। আলোচ্য মাসে দেশে প্রায় ১৪২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির ঈদে সব সময় রেমিট্যান্স বাড়ে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ঈদের কারণে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড হয়েছে। শহর থেকে গ্রামমুখী হয়েছে টাকার প্রবাহ। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এ সময় পশুসহ অন্য সব খাতেই লেনদেন অনেক বাড়ে। এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যে যে স্থবিরতা ছিল, সেটা কেটে যায়।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ বলেন, আগে শুধু কোরবানি দেয়াটাই ছিল মুখ্য। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পর্যটন। যুক্ত হয়েছে ঈদ বোনাস। সব মিলিয়ে একটি ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে অর্থনীতিতে। তিনি বলেন, ফ্রিজ, টিভি প্রভৃতি পণ্যের বিক্রি বাড়ছে। নতুন নোটের সার্কুলেশন বাড়ছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতেও আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগছে। ফলে ঈদের অর্থনীনিতিটা বড় হচ্ছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হেলাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের হিসাবে ছোট-বড় মিলে গড়ে একটি দোকানে লেনদেন ছিল প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এবার সেটি নেমে এসেছে অর্ধেকের কম। অর্থাৎ প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম লেনদেন হয়েছে। এর কারণ হলো- এবার মানুষ স্বচ্ছল ছিল না। বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলহানির ফলে মানুষের হাতে অর্থ ছিল না। দেশের বাইরের বিনিয়োগ খুব বেশি ছিল না। এছাড়া পশু কোরবানিও আশানুরূপ হয়নি। গত বছর যা হয়েছিল এবার তার চেয়ে কম কোরবানি হয়েছে।